মুসলিম উত্তরাধিকার আইন ও আইনের উত্স:
মুসলিম উত্তরাধিকার আইন কি?
ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী কোন মুসলমান মারা গেলে তার ফেলে যাওয়া সম্পত্তি বা ত্যাজ্য সম্পত্তি কিভাবে কাদের মধ্যে বন্টন করা হবে সে সম্পকির্ত বিধানকে মুসলিম উত্তরাধিকার বা ফারায়েজ বলে।
ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী কোন মুসলমান মারা গেলে তার ফেলে যাওয়া সম্পত্তি বা ত্যাজ্য সম্পত্তি কিভাবে কাদের মধ্যে বন্টন করা হবে সে সম্পকির্ত বিধানকে মুসলিম উত্তরাধিকার বা ফারায়েজ বলে।
উত্তরাধিকার আইনের উত্স:
১. কোরআন
২. হাদিস
৩. ইজমা
৪. কিয়াস
৫. আরবীয় প্রথা
৬. বিধিবদ্ধ আইন
১. কোরআনউত্তরাধিকার আইনের প্রথম ও প্রধান উত্স আল-কোরআন।আল কোরআনের সূরা নেসায়ের সপ্তম,অষ্টম,একাদশ,দ্বাদশ এবং একশত ছিয়াত্তর আয়াতে প্রত্যক্ষভাবে মুসলিম উত্তরাধিকার আইন সম্পর্কে বলা আছে।
যেমন- মুসলিম উত্তরাধিকার বা ফারায়েজ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের সূরা নিসায় বলা আছে যে, ১২ জন সম্পত্তির অংশীদার। যাদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ এবং ৮ জন নারী।পুরুষগন হলেন মুসলিম আইনে কোরআনের পবিত্র বিধান অনুযায়ী মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশগণ বা উত্তরাধিকারীগণ মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে সুনিদির্ষ্ট অংশ লাভ করিতে বাধ্য থাকে।
২.হাদিসএক কথায় হাদিস হলো হযরতের উক্তি, নিদের্শাবলী এবং তার জীবনের কার্যাবলীর মহাসংকলন।মুসলিম আইন বিজ্ঞানের বিধান মোতাবেক যে সকল বিষয় সমূহ হাদিসের ক্ষেত্রে অপরিহার্য তা নিম্নরূপ-
ক. হযরত মুহম্মদ(সঃ) এর অভিমত,উক্তি,শিক্ষা,উপদেশ,অনুশাসন এবং বাণীর সংকলন বিষয়ক মন্তব্য
খ. হযরতের দৈনন্দিন জীবন যাপন প্রণালী,কমর্তত্পরতা এবং হযরত কতৃর্ক সম্পাদিত কার্যাবলী বিষয়ক তত্পরতা,
গ. হযরতের পছন্দনীয় কার্যাবলী এবং অপছন্দনীয় কার্যসমূহের বিবরণ মূলক বক্তব্য,
ঘ. হযরত কতৃর্ক তার সাহাবীদের ক্ষেত্রে ইঙ্গিতবাহী সম্মতি বা নীরব সমথর্ন।
যেমন- হযরত ফাতেমা(রাঃ) একবার দাবী করেন যে, তিনি তাঁর পিতার সম্পদের ওয়ারিছ। কিন্তু এর উত্তরে হযরত আবুবকর(রাঃ) রাসুলুল্লাহর পবিত্র বাণী" আমরা,নবীরা কোন সম্পদ ওয়ারিছদের জন্য রেখে যাই না; আমাদের যা থাকে, তা অবশ্যই খয়রাতের জন্য'। এই হাদিসের সত্যতা সম্পর্কে কেউ প্রশ্ন করল না। হযরত ফাতেমার(রাঃ) দাবি অগ্রাহ্য করা হল।
৩. ইজমা
প্রকৃত অর্থে উলেমাগণের ঐক্যমত্যই হইল ইজমা এবং উহা অভ্রান্ত বলিয়া ধরিয়া নেওয়া হয়। কোরআন, হাদিস এবং সুন্নাহর মাধ্যমে যে আইন প্রনয়ণ কাজ চলে আসছিল তা হযরতের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধ হয়ে যায় অথচ নতুন নতুন সমস্যার উদ্ভব হতে লাগল যার সমাধানের জন্য কোরআন, সুন্নাহ কিংবা হাদিসের মধ্যে কোন নিদের্শ পাওয়া যেত না। এমতাবস্থায় অন্য কোন উপায়ে ঐ সব সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন হয়ে পড়ত। এই উদ্দেশ্যে অাইনবিদগন আইনের যে নীতির উদ্ভব করেছিলেন উহাই ইজমা।
যেমন- ধমীর্য় অনুশাসনের ব্যাপারে যেমন- রোজা, নামাজ,জনগণের সম্মিলিত মত দ্বারা বিধি প্রণয়ন, হযরত আবুবক্করকে খলিফা নিযুক্ত করা ইত্যাদি ঐক্যমত বা ইজমার দ্বারা হয়েছিল।
৪.কিয়াস
যখন কোন সমস্যা সমাধানের জন্য কোরআন,সুন্নাহ বা ইজমার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া না যায় তখন কিয়াস অথার্ত্ "ফলপ্রসু যুক্তি"-র দ্বারা সমাধান করাকে কিয়াস বলা হয়।
যেমন- ইসলামে মাদকতা সৃষ্টিকারী তীব্র পানীয়কে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মদকে স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ না করা হলেও যেহেতু মদ মাদকতা সৃষ্টিকারী তীব্র পানীয়, সুতরাং সাদৃশ্যমূলকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে বিবেচিত হয়। এটাই কিয়াস।
৫.আরবীয় প্রথা
মুসলিম আইনের পঞ্চম উত্স হল প্রাক ইসলামী প্রথা। কোরআন, হাদিস, সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াস ব্যতীত আইনবিদগণ যে উত্সটির উপর গুরুত্ব আরোপ করেন সেটা হল রীতি বা প্রথা। বহু পুরাতন আরব প্রথা কোরআনের আয়াত দ্বারা নাকচ করা হয়েছে। যা কোরআন কতৃর্ক নাকচ করা হয় নি এবং যা সুন্নাহ কতৃর্ক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে গৃহীত হয়েছে, উহা মুসলিম আইনের বিধি হিসাবে বতর্মান রয়েছে।
যেমন- প্রাক ইসলামী প্রথায় যিহার, ইলা, খুলা ইত্যাদি যে কোন প্রকার প্রথার মাধ্যমেই তালাক বা বিবাহ- বিচ্ছেদ হত, তালাকপ্রাপ্তাকে পুনরায় বিবাহ করার আগে কিছু কাল অপেক্ষা করতে হতো। এরূপে কোন নারীর পুনবির্বাহের পূর্বে এই অপেক্ষমান সময়কে ইদ্দত পালন বলে। ইসলামী আইনেও নিদির্ষ্ট মেয়াদে ইদ্দত পালন করতে হয়।
৬. বিধিবদ্ধ আইন
বাংলাদেশে মুসলমানদের উপর শুধু মুসলিম ব্যক্তিগত আইনই প্রয়োগ করা হয়। উত্তরাধিকার,বিবাহ,বিবাহ-বিচ্ছেদ, উইল, হিবা এবং ওয়াকফ্ সংক্রান্ত বিষয়গুলিতে মুসলিম আইন প্রয়োগ করা হয়। এ ছাড়াও মুসলিম ব্যক্তিগত আইন সম্পর্কে ও কতিপয় আইন বিধিবদ্ধ করা হয়েছে এবং ঐ প্রকারের আইনগুলোকে ৬ষ্ঠ উত্স বলে মুসলিম আইন বিকাশে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
বিধিবদ্ধ আইন হিসাবে আইন সভা দ্বারা পাশকৃত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আইনগুলো হল:
১.শরীয়া আইন,১৯৩৭
২.মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন, ১৯৩৭
৩.মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ,১৯৬১( অধ্যাদেশ নং ৮)
৪.মুসলিম বিবাহ ও বিবাহ-বিচ্ছেদ রেজিষ্ট্রেশন আইন, ১৯৭৪
৭. আদালতের সিদ্ধান্ত
দেশের উচ্চ আদালতের কোন জটিল বিষয়ের সিদ্ধান্তও মুসলিম আইনের উত্স হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে।
সুন্নী (হানাফী) উত্তরাধিকার আইনে যেসব উত্তরাধিকারীদের মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে অধিকার দেওয়া আছে:
অংশীদারগণ
স্বামী | পিতা | আপন বোন |
স্ত্রী | মাতা | বৈমাত্রেয় বোন |
দাদা | দাদী বা নানী | বৈপিত্রেয় ভাই |
কন্যা | পুত্রের কন্যা | বৈপিত্রেয় বোন |
১) স্ত্রীর সম্পত্তিতে স্বামীর অধিকার (Husband): মুসলিম আইন এবং কোরআনের বিধান মোতাবেক সম্পত্তি বন্টনের ক্ষেত্রে স্বামীকে দুটি অবস্থায় বিশ্লেষণ করা যায়; যথা -
ক) মৃত ব্যক্তির সন্তান সন্ততি বা পুত্রের সন্তান সন্ততি বা তার নিম্নে কেউ না থাকলে ১/২ অংশ পাবে।যেমন:
মৃত ব্যক্তি | |||
স্বামী (১/২)
|
পিতা (১/২)
|
খ) আবার মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান- সন্ততি কেউ থাকলে সেক্ষেত্রে ১/৪ অংশ পাবে। যেমন:
মৃত ব্যক্তি | |||
স্বামী (১/৪) | তিন পুত্র (৩/৪) |
২) স্বামীর সম্পত্তিতে বিধবা স্ত্রীর অধিকার (Wife): মৃত ব্যক্তির স্ত্রী একজন থাকুক আর একাধিক থাকুক তাদের সম্পত্তি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দুটি অবস্থা উল্লেখ করা যায়; যথা-ক) মৃত ব্যক্তির সন্তান সন্ততি বা তার নীচে কেউ না থাকলে স্ত্রী ১/৪ অংশ পাবে। যেমন:
মৃত ব্যক্তি | |||
স্ত্রী (১/৪) | পিতা (৩/৪) |
খ) অপরদিকে মৃত ব্যক্তির সন্তান সন্ততি বর্তমান থাকলে সেক্ষেত্রে স্ত্রী ১/৮ অংশ পাবে। আর যদি মৃত ব্যক্তির একাধিক বিধবা স্ত্রী থাকে, তবে সব বিধবা স্ত্রীরাই উপরোক্ত ১/৪ বা ১/৮ অংশ হতে যেরকমই হয়, সমান হারে তাদের অংশ ভাগ করে পাবে। যেমন:
মৃত ব্যক্তি | |||
স্ত্রী (১/৮) | পুত্র (৭/৮) |
স্বামী পীড়িত অবস্থায় স্ত্রীকে তালাক দিলে উক্ত তালাকী স্ত্রীর ইদ্দত কাল এর মধ্যে স্বামী মারা গেলে তালাকী স্ত্রী স্বামীর ওয়ারিশ হবে (192 Sind, 1771)। কিন্তু স্বামী একইভাবে স্ত্রীর উত্তরাধিকারী হতে পারবেনা।
৩) মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে পিতার অধিকার (Father): মুসলিম আইন এবং কোরআনের বিধান অনুযায়ী পিতা কোরানিক অংশীদার। পিতার এই অংশ তিনটি অবস্থায় দেখানো হলো।
ক) মৃত ব্যক্তির পুত্র কিংবা তার চেয়ে নীচে কেউ থাকলে পিতা মাত্র ১/৬ অংশ পাবে।
যেমন: সেলিম একজন সুন্নী মুসলমান সে পিতা, এক পুত্র ও এক কন্যাকে ওয়ারিশ রেখে মৃত্যুবরণ করেছে, এখন মৃত সেলিম এর সম্পত্তি বন্টন করা হবে ।
পিতা - | ১/৬ =৩/১৮ | অংশ অংশীদার হিসেবে প্রাপ্ত হবে |
পুত্র - | ৫/৯ = ১০/১৮ | অংশ অবশিষ্টাংশভোগী হিসেবে প্রাপ্ত হবে |
কন্যা- | ৫/১৮= ৫/১৮ | অংশ অবশিষ্টংশভোগী হিসেবে প্রাপ্ত হবে |
এক্ষেত্রে পিতা মৃত (পুত্র) সেলিম এর পুত্র, কন্যা বিদ্যমান থাকায় ১/৬ অংশীদার হিসেবে প্রাপ্ত হবে।
পুত্র ও কন্যা তাদের মৃত পিতার সম্পত্তিতে অবশিষ্টাংশভোগী হিসেবে যথাক্রমে ৫/৯ এবং ৫/১৮ অংশ প্রাপ্ত হবে। কন্যা পুত্রের অর্ধেক পাবে।
খ) পুত্র না থাকলে কন্যা বা তার নীচে কেউ থাকলে পিতা ১/৬ অংশ এবং এবং অবশিষ্টভোগী হিসেবে সম্পত্তি পাবে। যেমন:
মৃত জলিল | |||
পিতা | কন্যা | ||
১/৬ + ২/৬ (আসাবা) = ১/২ | ৩/৬=১/২ |
গ) পুত্র কন্যা বা পুত্রের পুত্র বা তার নীচে কেউই না থাকলে পিতা আসাবা বা অবশিষ্টাংশভোগী হবে এবং অবশিষ্ট সম্পত্তি পাবে।
মৃত বশীর | ||||
পিতা কালাম | মাতা ফুলি | ভাই জাহেদ | বোন নূরী | |
২/৩ | ১/৩ | ০ | ০ |
বশিরের পিতা জীবিত থাকায় ভাইবোন বঞ্চিত হবেন। তবে ভাইবোন জীবিত থাকায় মাতা ফুলি ১/৬ অংশ প্রাপ্ত হয়। অবশিষ্টভোগী হিসেবে পিতা কালাম ৫/৬ অংশ পেয়েছে।
অবশিষ্টাংশভোগী হিসেবে পিতা: মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তান এমনি নিম্নগামী অধঃস্তন বংশধর বিদ্যমান না থাকলে পিতা অবশিষ্টাংশভোগী বা শেষভোগী হিসেবে সম্পত্তি প্রাপ্য হয়।
অনুরূপভাবে মৃত ব্যক্তির অংশীদার শ্রেণীভুক্ত অন্য কোন ওয়ারিশ বিদ্যমান থাকলে, উক্ত অংশীদার শ্রেণীভুক্ত ওয়ারিশদের অংশ মিটিয়ে দেবার পরই পিতা অবশিষ্টাংশভোগী বা শেষভোগী হিসেবে সম্পত্তি প্রাপ্ত হবেন। যেমন: খায়ের একজন সুন্নী মুসলমান। সে এক স্ত্রী ও পিতাকে ওয়ারিশ রেখে মৃত্যুবরণ করেছে। এখন মৃত খায়ের এর সম্পত্তি বন্টন করতে হবে:
মৃত খায়ের | ||
স্ত্রী ১/৪
|
পিতা ৩/৪
|
এক্ষেত্রে মৃত খায়ের নিঃসন্তান বিধায় তার স্ত্রী ১/৮ এর স্থলে ১/৪ অংশ প্রাপ্ত হয়েছে এবং স্ত্রী অংশীদার শ্রেণীভুক্ত হওয়ায় তার ১/৪ অংশ মিটিয়ে দেবার পরই পিতা মৃত খায়ের এর বাকী (১ - ১/৪) = ৩/৪ অবশিষ্টাংশভোগী হিসেবে প্রাপ্ত হয়েছে ।
৪) মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে প্রকৃত পিতামহ বা দাদার অধিকার (True Grand-Father): মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান অথবা পুত্রের সন্তান (যতই নিম্নগামী হোক না কেন) থাকলে এবং পিতা অথবা নিকটতম পিতার পিতা না থাকলে সত্যিকার পিতামহ ১/৬ অংশ পায়। এবং এরা কেউ না থাকলে সত্যিকার পিতামহ অবশিষ্টভোগী অংশ গ্রহণ করবে। অর্থাত্ পিতা যে অবস্থায় যা পায় পিতামহ সে অবস্থায় তাই পাবে, কিন্তু পিতা জীবিত থাকলে পিতামহ কিছুই পাবে না। যেমন:
মৃত ব্যক্তি | ||
পিতামহ | পিতা | |
০ | ১ |
পিতার অবর্তমানে পিতার উল্লেখিত তিনটি অবস্থা পিতামহের উপর বর্তাবে । কিন্তু ৪টি মাত্র স্থানে পিতা ও পিতামহের কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়; যথা-
ক) পিতার মাতা পিতার সাথে থাকলে সম্পত্তি পায়না কিন্তু পিতামহের সাথে পেয়ে থাকে ।
খ) স্বামী বা স্ত্রীর সাথে পিতা ও মাতা থাকলে স্বামী বা স্ত্রীকে দিয়ে যা অবশিষ্ট থাকে মাতা তার ১/৬ অংশ পায় কিন্তু এক্ষেত্রে পিতার স্থলে পিতামহ থাকলে মাতা সমস্ত সম্পত্তির ১/৩ অংশ পায়।
গ) সহোদর ও বৈমাত্রেয় ভাই বোনগণ পিতার সাথে বঞ্চিত হবে, কিন্তু কোন কোন ইমামের মতে তারা পিতামহের সাথে বঞ্চিত হবে। ইমাম আবু হানিফা (রঃ) এর মতে তারা পিতামহের সাথেও বঞ্চিত হবে।আমরা উত্তরাধিকার বন্টনের ক্ষেত্রে উক্ত ইমাম সাহেবের মত অনুসরণ করে থাকি।
৫) মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে তার প্রকৃত মাতামহী/পিতামহী (নানী/দাদী) এর অধিকার (True Grand Mother): উত্তরাধিকার লাভের ক্ষেত্রে নানী/দাদীর তিনটি অবস্থা লক্ষ্য করা যায়:
ক)মৃত ব্যক্তির মাতা, নিকটতম প্রকৃত মাতামহী কিংবা নিকটতম প্রকৃত পিতামহী না থাকলে নানী ১/৬ অংশ সম্পত্তি লাভ করেন।
খ) মৃত ব্যক্তির মাতা, পিতা, নিকটতম প্রকৃত মাতামহী কিংবা নিকটতম প্রকৃত পিতামহী না থাকলে দাদী ১/৬ অংশ সম্পত্তি লাভ করেন।
গ) দাদী ও নানী উভয়েই থাকরে তারা একত্রে ১/৬ অংশ সমান পাবেন। প্রকৃত পিতামহী হলেন এমন একজন পূর্বনারী যার এবং মৃত ব্যক্তির মধ্যে মাতৃ সম্পর্কীয় কোন পিতামহ মধ্যবর্তী হননা। যেমন: পিতার মাতা, পিতার মাতার মাতা, পিতার পিতার মাতা, মাতার মাতা মাতার মাতার মাতা।
(৬) মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে তার মাতার অধিকার (Mother): উত্তরাধিকার লাভের ক্ষেত্রে মাতার তিন অবস্থা হতে পারে:
ক) যদি মৃত ব্যক্তির সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি, যত নিম্নেরই হউক, অথবা যদি পূর্ণ বৈমাত্রেয় বা বৈপিত্রেয় দুই বা ততোধিক ভাই কিংবা বোন, এমনকি একজন ভাই এবং একজন বোন থাকে, তাহলে ও ১/৬ অংশ পাবেন। যেমন:
মৃত ব্যক্তি
| ||
মাতা (১/৬) | পুত্র (৫/৬) |
খ) কিন্তু যেসকল ক্ষেত্রে মাতা ১/৩ অংশ পায় সেক্ষেত্র গুলো নীচে দেওয়া হলো:
যখন মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান অথবা পুত্রের সন্তান (যতই নিম্নগামী হোক না কেন) না থাকে, অথবা, যখন মৃত ব্যক্তির এক ভাই অথবা এক বোন এর বেশী না থাকে। কিন্তু বিশেষভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, যদি মৃত ব্যক্তির স্ত্রীর অথবা স্বামীর সাথে মাতা এবং পিতা থাকে, তবে সেক্ষেত্রে স্বামী বা স্ত্রীর অংশ বাদ দেবার পর যে অংশ বাকি থাকে, মাতা তার ১/৩ অংশ পাবে। প্রকৃত পিতামহী হলেন এমন একজন পূর্বনারী যার এবং মৃত ব্যক্তির মধ্যে মাতৃ সম্পর্কীয় কোন পিতামহ মধ্যবর্তী হন না। যেমন: পিতার মাতা, পিতার মাতার মাতা, পিতার পিতার মাতা, মাতার মাতা মাতার মাতার মাতা।
(৭) কন্যার অধিকার (daughter): মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে মৃত ব্যক্তির ঔরশজাত কন্যার অংশ বন্টনের ক্ষেত্রে তিন অবস্থায় অংশ বন্টন করা হয়। যেমন-
ক) মৃত ব্যক্তির কন্যা একজন থাকলে এবং পুত্র না থাকলে সে ১/২ (অর্ধেক) ভাগ সম্পত্তি পাবে ।
খ) দুই বা ততোধিক কন্যা থাকলে এবং কোন পুত্র না থাকলে তারা ২/৩ (তিন ভাগের দুই) ভাগ সমানভাগ পাবে।
গ) মৃত ব্যক্তির পুত্র থাকলে কন্যা/কন্যারা অংশীদার হিসেবে সম্পত্তি না পেয়ে পুত্রের সাথে ২:১ অনুপাতে অর্থাত্ অবশিষ্টাংশভোগী হিসেবে পুত্র যা পাবে কন্যা তার অর্ধেক পাবে। কন্যা কখনো পিতা/মাতার সম্পত্তি হতে বঞ্চিত হয়না ।
(৮) পুত্রের কন্যার (son's daughter) অথবা পুত্রের পুত্রের কন্যা অর্থাত্ পোত্রীর অধিকার:পুত্রের কন্যা বা পুত্রের পুত্রের কন্যা যত নিম্নের হোক এর উত্তরাধিকার আইন, ১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ এর ৪ ধারার প্রভাবে পরিবর্তন হয়েছে বিধায় তা মূল মুসলিম হানাফী আইন এবং পরিবর্তিত আইন এই দুই উপ-শিরোনামে আলোচনা করা যায়।
মুসলিম পারিবারিক অধ্যাদেশ এর ৪ ধারার প্রভাবে এই বঞ্চিত হওয়ার বিধান বাতিল হয়েছে। উক্ত ধারার মূল মুসলিম হানাফী আইন: মুল মুসলিম হানাফী আইন অনুসারে পুত্রের কন্যার সম্পত্তি লাভের ক্ষেত্রে চারটি অবস্থা লক্ষ্য করা যায়:
ক) মৃত ব্যক্তির পুত্র বা একাধিক কন্যা থাকলে পুত্রের কন্যা সম্পূর্ণরূপে উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।
খ) মৃত ব্যক্তির পুত্র-কন্যা না থাকলে পুত্রের কন্যা একা হলে ১/২ অংশ এবং একাধিক হলে ২/৩ অংশ সম্পত্তি পায়।
গ) মৃত ব্যক্তির যদি একমাত্র কন্যা তাকে, তবে পুত্রের কন্যা একা বা একাধিক যাই থাকুক একা বা সবাই শুধুমাত্র ১/৬ অংশ পাবে। একাধিক হলে এই ১/৬ অংশ সবাই সমানভাবে পাবে।
ঘ) মৃত ব্যক্তির পুত্রের পুত্র থাকলে, পুত্রের কন্যা অবশিষ্টাংশভোগী হিসেবে তার বা তার সাথে ২:১ সম্পত্তি লাভ করবে।
পুত্রের পুত্রের কন্যা যত নিম্নের হোক পুত্রের কন্যার মত পুত্রের পুত্রের কন্যার সম্পত্তি লাভের ক্ষেত্রে ও চারটি অবস্থা লক্ষ্য করা যায়।
ক) মৃত ব্যক্তির পুত্র বা একাধিক কন্যা বা নিকটতম পুত্রের পুত্র বা নিকটতম পুত্রের পুত্র বা নিকটতম পুত্রের একাধিক কন্যা থাকলে দুরবর্তী পুত্রের কন্যা উত্তরাধিকার হতে সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত হয়।
খ) মৃত ব্যক্তির পুত্র কন্যা বা নিকটতম পুত্রের পুত্র বা নিকটতম পুত্রের কন্যা না থাকলে দূরবর্তী কন্যা একা হলে ১/২ অংশ এবং একত্রে হলে সবাই ২/৩ অংশ পাবে।
গ) মৃত ব্যক্তির যদি একমাত্র কন্যা বা নিকটতম পুত্রের একমাত্র কন্যা থাকে, তবে দূরবর্তী পুত্রের কন্যা এক বা একাধিক যাই থাকুক, একা বা সবাই একত্রে শুধুমাত্র ১/৬ অংশ পাবে।
ঘ) পুত্রের পুত্রের কন্যার সাথে সমান স্তরে পুত্রের পুত্র থাকলে পুত্রের পুত্রের কন্যা অবশিষ্টাংশভোগী হিসেবে তার বা তাদের সাথে ২:১ হারে সম্পত্তি লাভ করবে। একই সাথে পুত্রের পুত্র/পুত্রের কন্যা এবং পুত্রের পুত্রের পুত্র/পুত্রের পুত্রের কন্যা অবস্থান করে তখন প্রথম ব্যক্তি শেষোক্ত ব্যাক্তির তুলনায় মৃত ব্যক্তির নিকটতম পুত্রের পুত্র/পুত্রের কন্যা হিসেবে গন্য করা হয়। একই সাথে যখন পুত্রের পুত্রের পুত্র ও পুত্রের পুত্রের কন্যা অবস্থান করে তখন তাদেরকে সমান স্তরের পুত্রের পুত্রের পুত্র এবং পুত্রের পুত্রের কন্যা হিসেবে উল্লেখ করা যায় ।
পরিবর্তিত আইন: পুত্রের কন্যার উত্তরাধিকার আইন আলোচনা করতে গিয়ে এটি লক্ষ্য করা যায় যে, পুত্রের কিংবা একাধিক কন্যার বর্তমানে মৃত পুত্রের কন্যা মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি হতে সম্পূর্নরূপে বঞ্চিত এবং শুধুমাত্র এক কন্যার বর্তমানে সে আংশিকভাবে মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি হতে বঞ্চিত হয়। ১৯৬১ সনের মর্ম মতে বর্তমানে উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সম্পত্তি বন্টন করার আগে যার সম্পত্তি ভাগ করা হবে তার মৃত্যুর আগে তার পুত্র বা কন্যার মৃত্যু হলে, উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সম্পত্তি বন্টন করবার সময় ঐ মৃত পুত্র বা কন্যা জীবিত থাকলে, যে পরিমাণ সম্পত্তি লাভ করত, তার সমান অংশ ঐ মৃত পুত্র বা কন্যার সন্তানরা লাভ করবে। নীচের উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি পরিস্কারভাবে বোঝানো হলো:
উদাহরণ- ১: বশিরের দুই পুত্র, বাদল ও জাহেদ এবং এক কন্যা জমিলা। প্রথম পুত্র বাদল এক কন্যা রেখে মারা যায়। তারপর বশির মারা যায়। মূল মুসলিম হানাফী আইনানুসারে বশিরের ত্যক্ত সমস্ত সম্পত্তি জাহেদ ও কন্যা জমিলা ২:১ হারে পেত। মৃতপুত্র বাদলের কন্যা কোন সম্পত্তি পেতনা। কিন্তু বর্তমান পরিবর্তিত আইনানুযায়ী বশিরের ত্যক্ত সম্পত্তি মোট ৫ ভাগ হবে। এর ২/৫ অংশ জাহেদ এবং ১/৫ অংশ কন্যা জমিলা পাবে। বাকী ২/৫ অংশ মৃত পুত্রের কন্যা পাবে। কারণ মৃত পুত্র বাদল বশিরের মৃত্যু আগে মারা না গেলে এই ২/৫ অংশই পেত।
উদাহরণ- ২: জালালের দুই পুত্র হাশেম ও কাশেম এবং এক কন্যা সালেহা। ছালেহা এক পুত্র রেখে মারা যায়। মূল মুসলিম হানাফী আইন অনুসারে জালালের সম্পত্তি তার দুই জীবিত পুত্রের প্রত্যেকে অর্ধেক করে পেত। তার কন্যার এক পুত্র করিম সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত হতো। বর্তমানে পরিবর্তিত আইন অনুযায়ী তার মৃত কন্যা ছালেহা বেঁচে থাকলে যে ১/৫ অংশ সম্পত্তি পেত তা মৃত কন্যা ছালেহার পুত্র রাশেদ পাবে ।
(৯) মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে তার আপন বোন বা পূর্ণ বোনের অধিকার (Full Sister): মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে মৃত ব্যক্তির পুর্ণ বোন বা সহোদর বোন থাকলে তারা পাঁচটি অবস্থায় অংশ প্রাপ্ত হয়ে থাকে। যেমন -
ক) মৃত ব্যক্তির যদি একজন আপন বোন থাকে তাহলে সে ঐ ব্যক্তির সম্পত্তির ১/২ অংশ পাবে ।
খ) যদি দুইবা ততোধিক সহোদর বোন থাকে তাহলে তারা ঐ সম্পত্তির ২/৩ অংশ পাবে ।
গ) আপন ভাইয়ের উপস্থিতিতে আপন বোন অবশিষ্টাংশভোগী হিসেবে ২:১ হারে সম্পত্তি পেতে পারে।
ঘ) আপন বোন মৃত ব্যক্তির সন্তান, পুত্রের সন্তান যত নীচের হোক, বা পুত্রের উপস্থিতিতে ও সে অংশীদার হতে বাদ পড়ে অবশিষ্টাংশভোগী হিসেবে সম্পত্তি পেতে পারে । কিন্তু ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবরিক আইনের বিধান মোতাবেক আপন বোন কোন অংশ পাবেনা। পুত্রের কন্যাই সব অংশ পাবে ।
ঙ) মৃত ব্যক্তির পিতা বা দাদা বর্তমান থাকলে সহোদর বোন বঞ্চিত হবে ।
(১০) মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে তার বৈমাত্রেয় বোনের (যেখানে পিতা একজন কিন্তু মাতা দুইজন তাদের সন্তানগনের) অধিকার (Consanguine Sister): মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে মৃত ব্যক্তির বৈমাত্রেয় বোন থাকলে তার অংশ ছয়টি অবস্থায় বন্টন করা হয়ে থাকে। যেমন -
ক) মৃত ব্যক্তির বৈমাত্রেয় বোন একজন থাকলে সে ১/২ অংশ প্রাপ্ত এবং একাধিক বৈমাত্রেয় বোন একত্রে ২/৩ অংশ সমানভাগে পায়।
খ) মৃত ব্যক্তির বৈমাত্রেয় ভাই বর্তমান থাকলে সেক্ষেত্রে বৈমাত্রেয় বোন তার সাথে অবশিষ্টাংশভোগী বা আসাবা হবে এবং ভাই যত পাবে বোন তার অর্ধেক অংশ পাবে ২:১ হারে সম্পত্তি পায়।
গ) মৃত ব্যক্তির একজন মাত্র আপন বোন থাকলে বৈমাত্রেয় বোন একজন হোক আর একাধিক হোক সবাই একত্রে ১/৬ অংশ পাবে।
ঘ) কিন্তু আপন বোন একাধিক থাকলে বৈমাত্রেয় বোন বঞ্চিত হবে। যেমন:
মৃত ব্যক্তি | ||
বৈমাত্রেয় বোন | আপন বোন | চাচা |
০ | ২/৩ | ১/৩ |
ঙ) মৃত ব্যক্তির পুত্র, পুত্রের সন্তান যত নীচের হোক, পিতা অথবা পিতার পিতা অর্থাত্ দাদা, একাধিক আপন ভাই এর উপস্থিতিতে বৈমাত্রেয় বোন উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।
চ) মৃত ব্যক্তির কন্যা বা পুত্রের কন্যা বর্তমান থাকলে তার সাথে অবশিষ্টাংশভোগী হবে এবং অবশিষ্ট সম্পত্তি পাবে।
(১১) বৈপিত্রেয় ভাই ও বৈপিত্রেয় বোনের অধিকার: (যেখানে পিতা দুইজন কিন্তু মাতা একজন তাদের সন্তানগণ) (Uterine Brother/Sister): বৈপিত্রেয় ভাই/বোন এর উত্তরাধিকারলাভে দুটি অবস্থা লক্ষ্য করা যায়।
ক) মৃত ব্যক্তির পুত্র, কন্যা, পুত্রের পুত্র বা পুত্রের কন্যা ইত্যাদি কেউই বর্তমান না থাকলে ও একজন বৈপিত্রেয় ভাই বা বোন থাকলে ও সে ১/৬ অংশ এবং একাধিক বৈপিত্রেয় ভাই/বোন একত্রে ১/৩ অংশ সমানভাবে পাবে। বৈপিত্রেয় ভাই-বোনেরা সমান অংশ পায়। এক্ষেত্রে ভাই-বোনের অংশের অনুপাত ২:১ না হয়ে ১:১ হবে ।
খ) মৃত ব্যক্তির পুত্র, কন্যা, পৌত্র (পুত্রের পুত্র), পৌত্রী (পুত্রের কন্যা), পিতা বা পিতার পিতা ইত্যাদি কেউ জীবিত থাকলে বৈপিত্রেয় ভাই/ বোন উত্তরাধিকার হতে বাদ পড়ে। দুটি উদাহরণের মাধ্যমে অংশীদারদের মাঝে সম্পত্তি বন্টন প্রক্রিয়াটি পরিস্কার ভাবে বোঝা যায় ।
উদাহরণ -১: একজন সুন্নী মুসলমান তার ক) পিতা খ) মাতা এবং গ) পুত্রের কন্যাকে রেখে মারা গেলেন ।এই ক্ষেত্রে তার ওয়ারিশদের অংশ বন্টন নীচের প্রক্রিয়া অনুযায়ী হবে:
পিতা -১/৬, মাতা -১/৬, কন্যা -১/২, পুত্রের কন্যা -১/৬
এই উদাহরণে সব ওয়ারিশরাই অংশীদার বা কুরানী ওয়ারিশ। ছেলেমেয়ে যেমন কন্যা এবং পুত্রের কন্যা থাকায় পিতা এবং মাতার প্রাপ্য অংশ ১/৬ হয়েছে। একজন কন্যার অংশ ১/২ অংশ। একজন কন্যা থাকায় পুত্রের কন্যা ১/৬ অংশ পাবেন। তবে মৃত ব্যক্তির দুইজন কন্যা থাকলে মৃত ব্যক্তির পুত্রের একজন কন্যা থাকায় পুত্রের কন্যা এক বা একাধিকই থাকুক, তার অংশ ১/৬ কমে এসেছে। এভাবে এই উদাহরণে যদিও মৃত ব্যক্তির পুত্রের কন্যা চারজন থাকতো, তবু তারা সবাই যৌথভাবে ঐ ১/৬ অংশই পেত এবং এই ৬/১ অংশই তাদের মাঝে সমানভাবে ১/২৪ অংশ ভাগ করা হতো।
উদাহরণ -২: একজন সুন্নী মুসলমান তার ক) মাতা, খ) তিন জন পূর্ণ বোন গ) একজন বৈমাত্রেয় বোন (যেখানে মাতা দুইজন কিন্তু পিতা একজন তাদের সন্তানগন) এবং একজন বৈপিত্রেয় বোনকে অথবা একজন বৈপিত্রেয় ভাইকে (যেখানে পিতা দুইজন কিন্তু মাতা একজন তাদের সন্তানগন) রেখে মারা গেল।এক্ষেত্রে ঐ মৃত ব্যক্তির বৈধ ওয়ারিশদের মধ্যে সম্পত্তি বন্টনের স্ব স্ব অংশ দেখানো হলো:
মাতা - ১/৬ অংশ (কারণ এইক্ষেত্রে একাধিক আপন বোন আছে)
৩ জন আপন বোন - ২/৩ অংশ (প্রত্যেকে ২/৩ অংশের ১/৩ অংশ করে)
১ জন বৈমাত্রেয় বোন - একাধিক আপন বা পূর্ণ বোন দ্বারা উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন।
বৈপিত্রেয় বোন বা বৈপিত্রেয় ভাই -১/৬ অংশ।
এইক্ষেত্রে সম্পত্তির মোট অংশ হলো ১/৬+২/৩+১/৬ = ৬/৬ =১ অর্থাত্ এখানেই সম্পত্তি শেষ হওয়ায় সম্পত্তি বন্টন ও শেষ হবে।
মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে স্বীকৃত উত্তরাধিকারীদের অধিকারের বিভিন্ন লঙ্ঘন ও প্রতিকারসমুহ:
| ||||||||||||||||||||||||||||||||
সম্পত্তি বেদখল
সম্পত্তি বেদখল কি:
সম্পত্তি বেদখল বলতে বোঝায় প্রকৃত মালিককে তার মালিকানা থেকে জোর করে উচ্ছেদ করে অবৈধভাবে সেখানে তার স্বত্তা প্রতিষ্ঠিত করা।
সম্পত্তি বেদখল কিভাবে হয়: জমি জমা ভোগ দখলে রাখার আশা মানুষের চিরকালের। তাই জমির দখল নিয়ে সব সময়ই সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে। অসাধু দাঙ্গাটে প্রকৃতির লোকেরা প্রায়ই লোকজনকে জোরপুর্বক বা চাতুরী পন্থায় ভুমি হতে বেদখল করছে।
করণীয় কী:
ভুমি হতে বেদখল হলে দখল পুনরুদ্বারের জন্য যে সমস্ত প্রতিকার আছে তা নিম্নে তুলে ধরা হলো:
সালিশের মাধ্যমে: কোন ব্যক্তির জমি বেদখল হলে তার গ্রামের স্থানীয় লোকদের নেতৃত্বে সালিশের মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তি তার জমি ফেরত পেতে পারেন । সালিশে মীমাংসার মাধ্যমে উভয় পক্ষের মধ্যে সমাধান করা হয়ে থাকে ।
ফৌজদারী আদালতে মামলা:
কোন ব্যক্তি তার সম্পত্তি হতে বেদখল হওয়ার ২ মাসের মধ্যে তিনি উক্ত ব্যক্তিকে বেদখল করার চেষ্টা হতে বিরত করার জন্য বা সম্পত্তিতে ঐ ব্যক্তির প্রবেশ বারিত করে আদেশ প্রদানের জন্য ১ম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট এর আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৫ ধারার বিধান অনুসারে মামলা করতে পারবেন। এ ধরনের মামলা অল্প সময়ের মধ্যেই নিস্পত্তি হয়ে থাকে। [ফৌজদারী কার্যবিধি ১৪৫ ধারা বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন]
দেওয়ানী আদালতে মামলা:
১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন এর ঌ ধারার বিধান হলো যিনি ভুমি হতে বেদখল হয়েছেন তাকে বেদখল হওয়ার তারিখ হতে ৬ মাসের মধ্যে মধ্যে দখল পুনরুদ্বারের দাবিতে দেওয়ানী আদালতে মামলা করতে হবে । ৬ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলে মামলা তামাদি দোষে বারিত হবে । এভাবে ৯ ধারায় মামলা করে আদালতের মাধ্যমে দখল পুনরুদ্বার করা যায়।
বাদী যদি সম্পত্তিতে নিজের স্বত্ব (মালিকানা) প্রমাণে সমর্থ নাও হন কেবল বেদখল হওয়ার পুর্ব পর্যন্ত দখলে থাকা প্রমাণ করতে পারেন তবেই তিনি তার পক্ষে ডিক্রী পেতে পারেন ।সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারা মতে প্রদত্ত ডিক্রী বা আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বা রিভিউ করার কোন বিধান নেই ।তবে মহামান্য হাইকোর্টে রিভিশন করা যাবে। কিন্ত সরকার কর্তৃক বেদখল হলে এ আইনে কোন প্রতিকার পাওয়া যাবে না।
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ১৮৭৭ এর ৮, ৯ ও ৪২ ধারাসমুহ এবং ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৫ ধারাসমুহ:
ধারা ৮। সুনির্দিষ্ট স্থাবর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার:
সুনির্দিষ্ট স্থাবর সম্পত্তির দখলের অধিকারী ব্যক্তি দেওয়ানী কার্যবিধি অনুযায়ী উহা নির্ধারিত পন্থায় পুনরুদ্ধার করতে পারে।
বিশ্লেষণ:
১। ধারাটি প্রতিপাদ্য বিষয়:
ধারা ৮ এর প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয় হলো যদি কোন ব্যক্তি দখলভুক্ত কোন স্থাবর সম্পত্তির দখল চুত্য বা দখল হারিয়ে ফেলে তবে সে ব্যক্তি দেওয়ানী কার্যবিধির বিধান মোতাবেক তা উদ্ধার করতে পারবে ।
২। দখল কি:
দখল বলতে সাধারণত কোন কিছুর উপর নিয়ন্ত্রণকে বুঝায়। এ ধারার দখল বলতে বর্তমান দখলকেই নির্দেশ করা হয়েছে। দখল প্রত্যক্ষ হয়ে থাকে। তবে এমন সম্পত্তি আছে স্পর্শত দখল করা যায় না। যেমন ব্যবসায়ের সুনাম।
এতদ্ব্যতীত দখলের আবার দু'টি দিক রয়েছে-(ক) অবয়বগত বা দেহের অধিকার এবং (খ) মনের ইচ্ছা। যেমন শহরে বসবাসকারী ব্যক্তির গ্রামের বাড়ীর সম্পত্তির দখল। এখানে উক্ত জমির উপর ব্যক্তির মনের অধিকার রয়েছে। কোন সম্পত্তির উপর যদি কোন মনের অধিকার না থাকে তবে তা দখলভুক্ত নহে। দৈহিক দখল না থেকেও যদি মনের দখল থাকে, তবে তা দখলভুক্ত বলে বিবেচিত হয়। অন্যের জমির উপর দিয়ে যাওয়া রাস্তায় আপনি হাঁটেন, অথচ উক্ত জমির মালিক আপনি নন। এক্ষেত্রে আপনি উহার মালিক নন।
ধারা ৯। স্থাবর সম্পত্তির দখল চুত: ব্যক্তি কর্তৃক মামলা যথাযথ আইনগত পন্থা ব্যতিরেকে যদি কোন ব্যক্তি তার অসম্মতিতে স্থাবর সম্পত্তির দখল চুত্য হয়, তবে সে অথবা তা মাধ্যমে দাবিদার কোন ব্যক্তি মামলার মাধ্যমে তার দখল পুনরুদ্ধার করতে পারে, যদিও তেমন মামলায় অপর কোন স্বত্ব খাড়া করা হতে পারে, তথাপিও।
এই ধারার কোন কিছুই তেমন সম্পত্তির ব্যাপারে নিজের স্বত্ব প্রতিষ্ঠা এবং তার দখল পুনরুদ্ধার করার জন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক মামলা দায়েরের পথে প্রতিবন্ধকতা হবে না।
তামাদি: দখল চুত্যির ১২ বছরের মধ্যে মোকদ্দমা করতে হবে।
ধারাটির মূল বক্তব্য:
ধারা-৯ এর মূল বক্তব্য হলো আইনগত পন্থা ছাড়া দখলচুত্য ব্যক্তি সম্পত্তিতে তার কোন স্বত্ব থাক বা না থাক, উক্ত দখলচুত্য স্থাবর সম্পত্তির দখল উদ্ধারের জন্য মোকদ্দমা দায়েরের মাধ্যমে তা উদ্ধার করতে পারে। তবে সম্পত্তিতে প্রকৃত স্বত্ববান ব্যক্তির স্বত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য মামলা দায়েরে কোন প্রতিবন্ধকতা থাকে না।
সরকারের ক্ষেত্রে এ ধারার কোন প্রয়োগযোগ্য নেই। আদালত যে আদেশ দেবে তার বিরুদ্ধে আপীল বা পুনর্বিবেচনার আবেদন করা যাবে না।
ধারা-৪২। মর্যাদা বা অধিকার ঘোষণা সম্পর্কে আদালতের ইচ্ছাধীন ক্ষমতা।- আইনানুগ পরিচয় কিংবা কোন সম্পত্তির স্বত্বের অধিকারী কোন ব্যক্তি এমন যে কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করতে পারে যে, তেমন মর্যাদা বা অধিকারের ব্যাপারে তার স্বত্ব অস্বীকার করেছে কিংবা অস্বীকার করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, এবং আদালত তার ইচ্ছাধীন এবং তেমন মামলায় আরও কোন প্রতিকার দাবি করা বাদীর জন্য আবশ্যক নয়।
তেমন ঘোষণার সাথে প্রতিবন্ধকতা- তবে শর্ত থাকে যে, যেখানে দাবি কেবলমাত্র স্বত্বের ঘোষণা ছাড়াও আরও প্রতিকার দাবি করতে সমর্থ, কিন্তু তা করা হতে বিরত থাকে, সেখানে আদালত তেমন ঘোষণা প্রদান করবেন না।
ব্যাখ্যা।- একটি সম্পত্তির জিম্মাদার এমন একটি স্বত্ব অস্বীকার করতে আগ্রহী ব্যক্তি, যে জীবিত নয় এমন এক ব্যক্তির স্বত্বের প্রতিকূল এবং যদি সে বেঁচে থাকত, তবে সে তার জন্য একজন জিম্মাদার হতো।
ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮
যখন কোন মেট্টোপলিটান ম্যাজিষ্ট্রেট, জিলা ম্যাজিষ্ট্রেট, মহকুমা ম্যাজিষ্ট্রেট বা প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট পুলিস রিপোর্ট বা অন্য কোনরূপ সংবাদ পাইয়া এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, তাঁহার অধিক্ষেত্রের স্থানীয় সীমার মধ্যে জমি বা পানি বা উহার সীমানা সম্পর্কে এমন একটি বিরোধ রহিয়াছে, যাহা শান্তিভঙ্গ ঘটাইতে পারে, তখন তিনি তাঁহার এইরূপ সন্তুষ্ট হওয়ার কারণ উল্লেখ করিয়া তাঁহার দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহকে ব্যক্তিগতভাবে বা উকিলের মারফত তাঁহার আদালতে হাজির হওয়ার এবং বিরোধের বিষয়বস্তুতে প্রকৃত দখল সম্পর্কে তাহাদের স্ব-স্ব দাবি সম্বন্ধে লিখিত বিবৃতি পেশ করিবা নির্দেশ দিয়া একটি লিখিত আদেশ দিবেন।
১ এই ধারার উদ্দেশ্যে জমি বা পানি বলিতে দালান, বাজার, মত্স খামার, ফসল বা জমিতে উত্পন্ন অন্যান্য দ্রব্য এবং এইরূপ কোন সম্পত্তির খাজনা বা লভ্যাংশও অন্তর্ভূক্ত।
ম্যাজিষ্ট্রেটের নির্দেশক্রমে এইরূপ ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণের উপর আদেশের একটি নকল, এই বিধিতে সমন জারির জন্য বিহিত পদ্ধতিতে জারি করিতে হইবে এবং অন্ততপক্ষে একটি নকল বিরোধের বিষয়বস্তুতে বা উহার নিকটে কোন প্রকাশ্য স্থানে লটকাইয়া দিয়া জারি করিতে হইবে।
দখল সম্পর্কে ইনকোয়ারী অতঃপর ম্যাজিষ্ট্রেট, বিষয়টির ন্যায়-অন্যায় বা বিরোধের বিষয়বস্তুতে উক্ত পক্ষসমূহের কাহারও দখলের অধিকারের দাবির প্রসঙ্গ না তুলিয়া, পেশকৃত বিবৃতিসমূহ পাঠ করিবেন, পক্ষসমূহের বক্তব্য শ্রবণ করিবেন, তঁাহারা যে সাক্ষ্য প্রমাণ হাজির করে তাহা গ্রহণ করিবেন, এইরূপ সাক্ষ্য প্রমাণের ফলাফল বিবেচনা করিবেন, প্রয়োজন মনে করিলে তিনি অতিরিক্ত সাক্ষ্য প্রমাণ (যদি থাকে) গ্রহণ করিবেন এবং সম্ভব হইলে উপরিউক্ত আদেশের তারিখে কোন পক্ষ বিরোধীয় বিষয়বস্তুতে দখলকার ছিলেন কিনা, এবং কোন পক্ষ দখলকার ছিলেন তাহা স্থির করিবেন।
তবে শর্ত থাকে যে, ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, উক্ত আদেশের তারিখের অব্যবহিত পূর্ববর্তী দুই মাসের মধ্যে কোন পক্ষকে বলপূর্বক ও অন্যায়ভাবে বেদখল করা হইয়াছে, তাহা হইলে তিনি এরূপ বেদখল পক্ষকে উক্ত তারিখ দখলকার ছিলেন বলিয়া গণ্য করিতে পারিবেন।
তবে আরও শর্ত থাকে যে ম্যাজিষ্ট্রেট যদি ঘটনাটিকে জরুরী বলিয়া মনে করেন, তাহা হইলে এই ধারা অনুসারে তাঁহার সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে যেকোন সময় এই বিষয়বস্তু ক্রোক করিতে পারেন।
এই ধারায় যাহাই থাকুক না কেন, উক্তরূপে হাজির হওয়ার নির্দেশপ্রাপ্ত কোন পক্ষ বা অন্য কোন স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রমাণ করিতে পারিবেন যে, উক্তরূপ কোন বিরোধের অস্তিত্ব নাই বা ছিল না; এবং এইরূপ ক্ষেত্রে ম্যাজিষ্ট্রেট তঁাহার পূর্বোক্ত আদেশ বাতিল করিবেন এবং পরবর্তী সমস্ত কার্যক্রম স্থগিত রাখিবেন, তবে এইরূপ বাতিলকরণ সাপেক্ষে ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক ১ উপধারা অনুসারে প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত বলিয়া বিবেচিত হইবে।
(ক) আইনানুগভাবে উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত
(খ) দখলকারের দখল অব্যাহত
(গ) ম্যাজিষ্ট্রেট যদি সিদ্ধান্ত করেন যে, পক্ষসমূহের মধ্যে এক পক্ষ বিরোধীয় বিষয়বস্তুতে দখলকার ছিলেন বা উপধারার প্রথম শর্ত অনুসারে তাহাকে উক্ত বিষয়বস্তুতে দখলকার বলিয়া গণ্য করা উচিত, তাহা হইলে তিনি একটি আদেশ দ্বারা সেই পক্ষকে আইন অনুসারে যথাযথভাবে উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত দখলের অধিকারী বলিয়া ঘোষণা করিবেন এবং এইরূপ উচ্ছেদ না পাওয়া পর্যন্ত উক্ত দখলের প্রতি সকল প্রকার বিঘ্ন সৃষ্টি নিষিদ্ধ করিবেন এবং তিনি যখন ৪ উপধারার প্রথম শর্ত অনুসারে অগ্রসর হন, তখন তিনি বলপূর্বক ও অন্যায়ভাবে বেদখল পক্ষকে দখল প্রত্যর্পণ করিতে পারেন।
(ঘ) এইরূপ কোন কার্যক্রমের কোন পক্ষ যখন মারা যায় তখন ম্যাজিষ্ট্রেট মৃত পক্ষের আইনসঙ্গত প্রতিনিধিকে কার্যক্রমের পক্ষ করাইতে পারিবেন এবং অতঃপর তিনি অনুসন্ধান চালাইয়া যাইবেন এবং মৃত পক্ষের আইনসঙ্গত প্রতিনিধি সম্পর্কে যদি কোন প্রশ্ন উঠে তাহা হইলে মৃত পক্ষের প্রতিনিধি বলিয়া দাবিদার সকল ব্যক্তিকে কার্যক্রমের পক্ষ করিতে হইবে।
ম্যাজিষ্ট্রেট যদি মনে করেন যে, এই ধারা অনুসারে তাহার বিবেচনাধীন কোন কার্যক্রমের বিষয়বস্তু, কোন সম্পত্তির ফসল বা অন্য কোন উত্পন্ন দ্রব্য দ্রুত ও স্বাভাবিকভাবে ক্ষয়শীল, তাহা হইলে তিনি উক্ত সম্পত্তির যথাযথ হেফাজত বা বিক্রয়ের জন্য আদেশ দিতে পারিবেন এবং অনুসন্ধান সমাপ্ত হওয়ার পর উক্ত সম্পত্তি বা উহার বিক্রয়লব্ধ অর্থ বিলি-বন্টনের জন্য তিনি যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করেন, সেইরূপ আদেশ দিবেন।
ম্যাজিষ্ট্রেট উপযুক্ত বলিয়া মনে করিলে এই ধারা অনুসারে পরিচালিত কোন কার্যক্রমের যেকোন পর্যায়ে যেকোন পক্ষের আবেদনক্রমে কোন সাক্ষীকে হাজির হওয়ার বা কোন দলিল বা বস্তু হাজির করিবার নির্দেশ দিয়া সমন করিতে পারিবেন।
এই ধারায় কোন বিধান ম্যাজিষ্টেটের ১০৭ ধারা অনুসারে অগ্রসর হওয়ার ক্ষমতা ব্যাহত করে বলিয়া গণ্য করা যাইবে না।
এ ছাড়াও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের সাহায্য নিতে পারেন যারা বিনামূল্যে আইনগত সহায়তা প্রদান করে থাকে।
|
No comments:
Post a Comment